আমরা কেন পারিনা প্রতিটি সফল আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের প্রতিটি নাগরিকের একটাই চাওয়া থাকে দেশ যেন বিগত সময়ের চেয়ে সুন্দরভাবে এগিয়ে যায়।
স্বাধীন দেশে কেন স্বৈরাচার ?
স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্তি পেতে স্বাধীনতা অর্জন করা দেশে, স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে কেন স্বৈরশাসকের আগমন ঘটে। এটা কোনভাবেই কাম্য নয়। এদেশের মানুষ স্বৈরশাসক, স্বৈরাচার ব্যবস্থা মানেনা, মানবে না। যে কারণে দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী এক যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে এদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এসেও কেন, সেই পুরোনো রীতি, নীতি স্বৈরশাসক ব্যবস্থা ফিরে আসলো। কেন আবার জীবন দিতে হল। কেন আবারও রক্তাক্ত দেখতে হল কেন? আজ এগুলো দেখার জন্যই কি মুক্তিযুদ্ধে এদেশের সকল শ্রেণীর মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল?
স্বৈরশাসকের অধীনেই যদি থাকতে হয়, তাহলে বলতে হয় ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের কোনো প্রয়োজন ছিল না। ২৪ এর স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগের চেয়ে, পশ্চিম পাকিস্তান শতগুণে ভাল ছিল এবং এখনো আছে। আওয়ামী লীগের শাসনামলে এই দেশটাকে যেভাবে ভারতের গোলামে পরিণত করে গেছে, এই দেশটা যদি পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে সম্পৃক্ত থাকত, তাহলে আজ উল্টো ভারত বাংলাদেশের গোলামে পরিণত হত। এ দেশের মানুষ এটাই চায়। ভারতীয় স্বার্থনীতির যে আগ্রাসনে বাংলাদেশকে ধ্বংসের মুখে ফেলে গেছে আওয়ামী লীগ, দেশের মানুষ সেখান থেকে মুক্তি চায়।
রাষ্ট্র সংস্কার অতি প্রয়োজনীয় বিষয়
রাষ্ট্রের সার্বভৌম রক্ষার কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যে সংবিধানের জন্য স্বাধীন দেশে বার বার স্বৈরশাসকের আর্বিভাব ঘটে সেই সংবিধানের কাছে কখনোই রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রের নাগরিক কেউ নিরাপদ নয়। সংবিধানে থাকা যে বিষয়গুলো পরিবর্তন করলে দেশ ও মানুষের মঙ্গল হবে অতি দ্রুত সেই বিষয়গুলোতে পরিবর্তন আনা জরুরি। বাংলাদেশ যে সংবিধানের ওপর চলে, সেই সংবিধান ভারতীয় স্বার্থনীতির জয়গানে ভরা। এমন সংবিধান যতদিন পরিবর্তন আনা না হবে, ততদিন দেশে স্বৈরশাসক ও ভারতীয় আগ্রশন থেকে মুক্তি পাওয়া অসম্ভব।
বিচার বিভাগ যেমন হওয়া উচিত
আওয়ামী লীগ ১৫ বছরে দেশের বিচার ব্যবস্থা একেবারেই ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিচার বিভাগের যে মূল লক্ষ্য সেটিই নষ্ট করেছে আওয়ামী লীগ । দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, নাগরিকদের ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অধিকার সংরক্ষণ, রাজনৈতিক আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করা, রাষ্ট্রে সকল নাগরিকদের শিক্ষার ব্যবস্থাকরা। বিচার বিভাগের কাজের মধ্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল, বিচার বিভাগ আইন প্রণয়ন করে, সেই আইন অনুযায়ী বিচার করাই হল বিচার বিভাগের মূল দায়িত্ব। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে বিচার বিভাগ যেন এই দায়িত্বটা ভুলেই গিয়েছিল। শুধু বিচার বিভাগ নয় রাষ্ট্রের প্রতিটি কাজে সরকার প্রধানের হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা গেছে। সরকার প্রধানের হুকুম ছাড়া কোন কাজই হতে দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনকালে এরকমই ছিল দেশের বিচার বিভাগ। বিচার বিভাগের এই কার্যকলাপ বদলাতে হবে। বিচার বিভাগের উপর কারও কোনো হস্তক্ষেপ চলবে না। বিচার বিভাগ থাকবে সম্পূর্ণ স্বাধীন।
সবচেয়ে ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্ট
সবচেয়ে বেশি ক্ষমতাবান প্রেসিডেন্ট হওয়া শর্তেও কেন আইন ও বিচার বিভাগের উপর বিন্দু মাত্র হস্তক্ষেপ প্রয়োগ করতে অপারক। কখনো ভেবে দেখেছেন কি? কেন তাদের বিচার বিভাগ এতটা স্বচ্ছ ও স্বাধীন, বলছিলাম যুক্তরাষ্ট্রের কথা। যুক্তরাষ্ট্র বিচার বিভাগের কারণেই নির্বাচনে জয়লাভ করা ব্যক্তি শপথ বাক্য পাঠ করে ক্ষমতায় এসে স্বৈরশাসক হতে পারে না। প্রেসিডেন্ট চাইলে যে কোন পদক্ষেপ নিতে বা ঘোষণা করতে পারে তবে, প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দেওয়ার পর আদালত ও বিচার বিভাগ সেটা খুব গুরুত্বের সাথে বিচার বিশ্লেষণ করে থাকে। সে সময়ে যদি কোনো অনৈতিক বা অসদাচরণ বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত কোনো কিছু পাওয়া যায় তাহলে সাথে সাথে, প্রেসিডেন্টের দেওয়া সেই ঘোষণা পত্র স্থগিত করে দেয়। এরই নাম হচ্ছে আদালত ও বিচার বিভাগ।
লাগাম হীন বাজার দর
খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ও দিন মজুরি করে সংসার চালানো মানুষগুলো কি পরিমাণে কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছে সেগুলো দেখবার কেউ নেই। আকাশচুম্বী বাজার দর, কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে চাল, ডাল, তেল সহ দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বাজারে থাকা প্রতিটি পূর্ণের প্রায় একই অবস্থা। দেশে বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিং করে এই আকাশ ছোয়া বাজার মূল্য ও জিনিস পত্রের দাম সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের সাদ্ধের মধ্যে আনতে হবে। বাজারে থাকা প্রতিটি দোকানে দ্রব্যের মূল্য তালিকা ঝুলিয়ে রাখতে হবে। একই পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন দোকানে ভিন্ন ভিন্ন দামে বিক্রয় করতে পারবে না। যদি কেউ এই আদেশ না মানে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রাখতে হবে।
টিসিবির কার্ড ধোনীদের জন্য নয়
সরকারিভাবে সহায়তা দেওয়া টিসিবির কার্ড কেবল গরীব , দুঃখী ও অসহায় পরিবার গুলোর জন্যই দেওয়া হয়ে থাকে। কোনো ধনী পরিবার যেন টিসিবি কার্ডের সুযোগ সুবিধা নিতে না পারে সেই দিকটা খুব গুরুত্বের সাথে সরকারের পক্ষ থেকে মনিটরিং করা উচিত। গ্রাম ও শহর এলাকায় সরকার টিসিবি কার্ড যাদের হাতে বিতরণের জন্য দিয়েছিলেন মেম্বার ও চেয়ারম্যান, তারা কার্ডগুলো বিতরণ না করে নিজেরাই ভিন্ন ভিন্ন নামে কার্ড গুলো ব্যবহার করে কার্ডের সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছিলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে তা সবাই দেখেছে। এমন ঘটনা যেন আর দেখতে না হয়।
আমরা কেন পারি না
২০২৪ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্বাধীনতা লাভ করা সিরিয়া, ইতিমধ্যে আসাদ সরকারের শাসনামলে চলা সংবিধান স্থগিত ও আসাদ প্রশাসনকে অনৈতিক কাজে সহযোগীতার দায়ে ৩৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছে। স্বাধীনতা অর্জন করা পরবর্তি সময়ে এসেও বাংলাদেশ কেন এমন পদক্ষেপ নিতে পারছে না। আওয়ামী লীগ যে ভয়ংকর রূপ দেখিয়েছিল তা এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে চলবে না।