রাজনীতি এখন ডাইনিং টেবিলে পরিণত হয়েছে। ক্ষমতায় যে আসে সেই খেতে বসে যায়। জাবদিহি নেই কোন জায়গায়।
প্রজাতন্ত্রের চাকরি করা ব্যক্তিগুলো সরকারের সব অনৈতিক ও রাষ্ট্রদ্রোহী কর্মকাণ্ড দেখার পরও মুখ বুজে সব সহ্য করে যাচ্ছে। মুখ খোলার মত কারও সাহস নেই।
রাজনীতি এখন ডাইনিং টেবিল
শেখ মুজিব ৭১ সংগ্রামে কিছু রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে, সে সময়ে দেশে মানুষের মন জয় করেছিলেন। মুজিব বলেছিলেন, আমার সবচেয়ে বড় শক্তি আমার দেশের মানুষকে ভালবাসি, আমার সব চেয়ে দূর্বলতা আমি তাদেরকে অনেক বেশি ভালবাসি। সত্যি কথা হল রাজনীতিতে ভালবাসা বলে কিছু নেই, সবই সময় উপযোগী বক্তব্য।
রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গরা
নিজ নিজ উদ্দেশ্য হাসিল করতে তারা সময়ের ওপর বিচার বিশ্লেষণ করে, সময় উপযোগী বক্তব্য দিয়ে নিজেকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে নেওয়ায় প্রধান লক্ষ্য।
রাজনীতি হল দাবা খেলার মত, দাবা খেলায় আপনি যদি ঘোড়ার আড়াই চাল বুঝতে সক্ষম হন, তাহলে আপনার প্রতিপক্ষ হবে কাবু আর আপনি হবেন বাবু। তেমনি, শেখ মুজিব ছিলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অধিকারী । রাজনৈতিক সময় উপযোগী জ্বালাময়ী ভাষণ ও বক্তব্য দিয়ে মানুষের মনে ঠাই করে নিতে ভুল করেননি।
মুজিব বলেছিলেন
প্রধানমন্ত্রী হবার কোন ইচ্ছা আমার নেই। আমাকে যে, ভালবাসা ও সম্মান দেশবাসী দিয়েছে, তা সারাজীবন মনে রাখব। সারাজীবন মনে, রাখার কথা বললেও মাত্র কয়েক দিনেই সব ভুলে, তৈরী করেন রক্ষী বাহিনী। রক্ষী বাহিনী গঠনের মধ্য দিয়েই মুজিব স্বৈরশাসক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
পিতা শেখ মুজিবের মতই, শেক হাসিনা মুখে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে জনগণকে ঘোল খায়িয়ে দেশকে ঋণে জড়জড়িত করে পাকাপোক্ত করেছে নিজের অর্থ ভাণ্ডার। দেশের রিজার্ভ শূন্য করে বাড়িয়েছেন নিজের ও আত্মীয়-স্বজনের নামে থাকা দেশে বিদেশে বিভিন্ন ব্যাংক আকাউন্টে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার।
জুলাই আগস্ট আন্দোলনে
আওয়ামী লীগ দল সহ শেখ হাসিনার নামে যখন বিভিন্ন দূর্নীতি ফাঁস হতে থাকে, সে সময়ে আমেরিকায় থাকা সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৬২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ জব্দ করেছিল আমেরিকা প্রশাসন। এটা কেবল আমেরিকার একটি ঘটনা, এরকম অনেক দেশে আওয়ামী লীগের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ও সম্পদ আছে। গত ১৫ বছর অবৈধ্যভাবে ক্ষমতায় থেকে তারা এই সম্পদ গুলো আত্মসাৎ করেছিল।
ক্ষমতায় আসা প্রতিটি দল একই রূপ দেখিয়েছে। তারা ক্ষমতায় আসেন কেবল খাওয়ার জন্য। ৫ আগস্ট ২০২৪ এরপর, এখন দেশের যে অবস্থা তাতে দেখা যাচ্ছে, আওয়ামী লীগের সময়ে দূর্নীতি ও চাঁদাবাজি করা অমানুষগুলো নিজেকে বিএনপি ও জামায়াত কর্মী বলে পরিচয় দিয়ে দলে যুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের বহু নেতা ও দোসরদের এখন বিএনপি দলে দেখা যাচ্ছে। এভাবেই তারা এ দেশটাকে ভাগাভাগি করে খেয়ে যাচ্ছে ৭১ এর পর থেকে।
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুটি
রাজনৈতিক দল হল বিএনপি ও আওয়ামী লীগ। রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা পরিবার গুলো সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায় প্রতিটি পরিবারেই রয়েছে দুই দলের সদস্য। একই পরিবারে থাকা দুই ভাই রাজনীতি করেন ভিন্ন ভিন্ন দলে, এটা তাদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক স্বাধীনতা। তবে রাজনৈতিক স্বাধীনতার নামে তারা যা করে যাচ্ছে সেটা হল, রাজনৈতিক স্বাধীনতার অপব্যবহার। কারণ, ক্ষমতায় থাকাকালিন দূর্নীতি ও চাঁদাবাজি করে, ক্ষমতা হারানোর পর অপর দল ক্ষমতায় এলে দূর্নীতির দায়ে গ্রেফতার এড়াতে নেন, ক্ষমতায় আসা দলে থাকা ভাইয়ের সহযোগীতা।
মূলত, রাজনৈতিক দলগুলো একারণেই নিজেদের অস্তিত্ব ও সুনাম হারাচ্ছে। যার কারণে, দলের পক্ষে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দূর্নীতি, লুটপাট, রাজনৈতিক হয়রানি, ভূমি দখল সহ বিভিন্ন অনৈতিক ও অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে দলকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হয়ে থাকে।
এমতবস্থায়, রাজনৈতিক দলগুলোর করণীয় হচ্চে রাজনৈতিক নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিক পন্থায় যাচাই বাছাই করে দলে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।