আর কত ঊনসত্তর নব্বই ও চব্বিশ দেখতে হবে। যে কারণে ৬৯ ঘটেছিল, পাকিস্তানিরা মুসলিম জাতি হলেও পূর্বপাকিস্তানিদের সাথে মতের অমিল ও পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে পূর্বপাকিস্তানিরা নির্যাতিত হত । পশ্চিম পাকিস্তানিরা নিজেদের স্বার্থকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিত, এ রকম কিছু ঘটনার কারণেই ৬৯ এর গণঅভ্যূত্থানে হওয়া প্রয়োজন ছিল।
বর্তমান সময়ে বড় রাজনৈতিক দলগুলো লুকোচুরি খেলা খেলবে আর এদেশের নাগরিকসহ তরুণ সমাজ বলীর পাঠা হবে। কেন? আপনাদের বিবেক বলে কিছুই নেই? ছোট বেলার লুকোচুরি খেলার কথা কি আপনাদের মনে আছে? নাকি ভারতীয় চৌদ্দ ভাতার ওয়ালা ও স্বামী রেখে পরকীয়া করা এই সিরিয়াল গুলো দেখতে দেখতে আপনার বিবেক বোধ রসাতলে গেছে।
বর্তমান উপদেষ্টাতে থাকা কিছু অতি বুদ্ধিমান ব্যক্তি গুলো যখন আদালতের দোহাই দিয়ে কথা বলে থাকেন তাদের জানা উচিত আদালত কি, আদালত কিভাবে চলে, আদালত কেমন হওয়া উচিত, তা জানতে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের দিকে নজর দিন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা গ্রহণের পর যে সিদ্ধান্ত গুলো নিয়েছিলেন তার মধ্যে আদালত একটি সিদ্ধান্ত আটকে দিয়েছে। এটাই হচ্ছে আমেরিকার আদালত। আদালতের উপর কারও কোনো হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই। অপর দিকে বাংলাদেশের আদালতের দিকে তাকালে দেখা যায় একজন পাতি নেতার কথায়ও আদালত চলে। আর আমেরিকার আদালত প্রেসিডেন্টের কথায়ও চলে না।
বাংলাদেশের আদালত যদি আমেরিকার মত স্বাধীন হত, তাহলে কোনোদিনও জামায়াত নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করা সম্ভব হত না। বর্তমান সময়ে যারা রাজনৈকিত দল হিসেবে বিবেচিত প্রকৃতপক্ষেই তারা রাজনৈতিক দল নয়। তারা হলো রাজনীতি ব্যবসায়ী সে কারণেই তারা রাষ্ট্র সংস্কার চায় না । ৭২ এর সংবিধান ও রাষ্ট্র সংস্কার হলে তাদের পেটে লাথি পড়বে, এটা তারা ভালো করেই জানে। সে জন্য যখনই রাষ্ট্র সংস্কারের কথা ওঠে তখনি তারা দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার কথা বলে ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা করে থাকে।
এভাবে আর কতদিন । ২৪ এর স্বৈর শাসকের পতন ঘটানোর আন্দোলনে নিহত হয়েছে আবু সাঈদ, মুগ্ধ ও ইয়ামিনের মত আরও অনেক দেশ প্রেমিক তরুণ । আগামীতে আবারও স্বৈর শাসক প্রতিষ্ঠিত হলে তার পতন ঘটাতে জীবন দিবে আবু সাঈদ, মুগ্ধও ইয়ামিনের ভাই। এভাবেই যুগে যুগে স্বৈর শাসক আসবে ও তার পতন ঘটাতে নিজের জীবন বিলিয়ে দিবে দেশ প্রেমিক তরুণরা।
জীবন দিবে তরুণরা আর আন্দোলন পরবর্তি সময়ে এর সুবিধা ভোগ করতে উচ্চ গলায় কথা বলবে রাজনীতি ব্যবসায়ীরা এটা হতে দেওয়া যাবে না।
কেন বার বার স্বৈর শাসক আসে, কেন বার বার আন্দোলন করতে হয়, কেন বার বার জীবন দিতে হয়? স্বৈর শাসক আসার রাস্তা বন্ধ করতে পারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে এই বিষয়টা কেন একটি বারও আপনারা বোঝেন না।
একটি পুকুড়ের মাঝখানে মরা কুকুর পড়ে আছে সেখান থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে । সেই দুর্গন্ধ দুর করতে আপনি পুকুড়ের চারদিকে সুগন্ধি ছিটাচ্ছেন, এত করে কি দুর্গন্ধ দূর করা সম্ভব হবে? এর উত্তর হচ্ছে কখনোই না। দুর্গন্ধ দূর করতে হলে যেটি করতে হবে, পুকুড় থেকে কুকুরটি তুলে মাটি গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে, তাহলে তার থেকে আর দুর্গন্ধ ছড়ানোর কোনো সুযোগ থাকবে না।
একইভাবে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার রাস্তা বন্ধ করা হলে, আন্দেোলন, আয়নাঘর, গুম, খুন, হত্যা ও নিজের জীবন বিলিয়ে দেওয়া এইসবের কোনোটিই আর প্রয়োজস হবে না।
সবার জন্যই ভাল হবে এমন একটি শাসন ব্যবস্থা দেশে চালু করা প্রয়োজন। যে শাসন ব্যবস্থায় সবাই আস্থা রাখতে পারবে এমন একট শাসন ব্যবস্থা সবাই আশা করে । অন্য দেশগুলোর দিকে সজর দিলে দেখা যায় তাদের প্রশাসনিক, আইন আদালত ও রাষ্টীয় শাসন ব্যবস্থায় সেদেশে বসবাসকারী মানুষ গুলো অন্য রকমের একটা আস্থা রাখে। সেই বিষয় গুলো নিয়ে, যদি বাংলাদেশের শাসন ব্যবস্থার দিকে তাকানো হয় তাহলে দেখা যাবে এই দেশের শাসন ব্যবস্থা একেবারে নড়বড়ে অবস্থা বিরাজ করে।
দেশের শাসন ব্যবস্থা উন্নত হলে কেবল দেশের মানুষের আস্থা্য় বাড়বে না, সেই সাথে বিদেশীদেরও আস্থা বাড়বে এই দেশের উপর । এবং তারা বাণিজ্যিক বিষয়ে এই দেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে থাকে।