রাজনৈতিক দল ও জুলাই আগস্ট আন্দোলনে মাঠে সক্রিয় থাকা সমন্বয়কদের মধ্যে যা ঘটতে পারে
বিগত ১৫ বছর ধরে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ হাসিনা সরকার ক্রমেই ভয়ংকর থেকে অতি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে চালাতে থাকে গণহত্যা।
সেই গণহত্যায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে সহায়তা করে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী থেকে শুরু করে প্রশাসনে থাকা কিছু সদস্য। সবচেয়ে বেশি গণহত্যা কার্যক্রমে সহয়তায় আলোচনায় আসে ছাত্রলীগ। প্রশাসনের সঙ্গে থেকে তারা সরাসরি গুলি চালিয়ে পাখির মত মানুষ হত্যা করে।
বিগত সময় গুলোতে যখন অবৈধ্য হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে দেশে লাখ লাখ মানুষ রাস্তায় নামে আন্দোলনের জন্যে ঠিক সে সময় গুলোতে ছাত্রলীগ আন্দোলন প্রতিহত করার জন্য অস্ত্র হাতে রাস্তায় নামে এবং নির্বিচারে গুলি বর্শন করতে থাকে এতে আন্দোলনে থাকা অসহায় সাধারণ মানুষগুলো পাখির মত মারা যেতে থাকে ।
হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে যখন আন্দোলনে ব্যর্থ হয় দেশের বড় রাজনৈতিক দলগুলো তখন জনমনে একটি আতঙ্ক দেখা দেয়। স্বৈরাচার হাসিনার শেষ কোথায় এই প্রশ্ন প্রায় প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে । কারণ দেশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুটি দল হলো বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও অপর রাজনৈতিক দলটি হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। একে অপরের বিরোধীতা করে থাকে আর সমমনা দলগুলো এদের সঙ্গে এসে তাদের একটি শক্তি প্রদর্শন করার চেষ্টা করে থাকে ।
আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন অবৈধ্যভাবে ক্ষমতায় থাকার ফলে প্রশাসন ও ছাত্রলীগকে কাজে লাগিয়ে প্রতিটি আন্দোলন তারা খুব সহজেই প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। ফলে জনমনে একটি আকঙ্ক বিরাজ করে। এভাবে চলতে থাকলে ত আওয়ামী লীগকে কোনো দিনও ক্ষমতা থেকে সরানো সম্ভব নয়।
যখন বড় রাজনৈতিক দল ও সমমনা দল গুলো আন্দোলনে ব্যর্থ ঠিক তখন একদল তরুণ যুবক মাঠে সক্রিয় অবস্থায় তাদের দেখা যায়। সেই সাথে বিভিন্ন দাবি দাওয়া উঠতে থাকে। সেসব দাবি দাওয়া মেনে নিতে আপত্তি দেখায় অবৈধ্য ভাবে ক্ষমতায় থাকা হাসিনা সরকার। আন্দোলন আরও তীব্র হতে থাকে, আন্দোলন যত তীব্র হতে থাকে সরকার তা প্রতিহত করতে ক্ষমতা জোরদার করে। এক পর্যায়ে বিভিন্ন দাবি দাওয়া থেকে দাবি ওঠে একদফা একদাবি স্বৈরাচার হাসিনা কবে যাবি?
সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। আন্দোলন প্রতিহত করতে সরকারের নির্দেশে মাঠে নামে সকল শ্রেণীর প্রশাসন। সেই সাথে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন এবং আলোচনার শীর্ষে থাকা ছাত্রলীগ।
শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন যখন ঢাকা থেকে সারা দেশ ছড়িয়ে পড়তে থাকে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক হারে দেশে ও বিদেশে সমালোচনার ঝড় তোলে ঠিক সে সময়ে দেশে সকল ধরনের ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে সরকার । দেশে থাকা সকল মোবাইল অপারেটর ও ব্রডব্যান্ড সরকারের নির্দেশে ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে চালাতে থাকে গণহত্যা। এরপরেও আন্দোলন প্রতিহত করতে ব্যর্থ হওয়া হাসিনা সরকার নির্দেশ দেন হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর ফলে জনমনে আকঙ্ক বাড়তে থাকে।
মাঝে মাঝেই ছোড়া হয় সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার গ্যাস। চারদিকে শুধু কালো ঘন ঘুটঘুটে অন্ধকার টিয়ার গ্যাসে দম বন্ধ হওয়া অবস্থা বিরাজ করছে। তার মাঝেও পিছু হটেনি স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষক, শিক্ষিকা বৃন্দ।
সেই সাথে আরও আছে সকল শ্রেণীর কর্মজীবি অসহায় মানুষ গুলো যারা দিনরাত অনাহারে থেকে হাসিনা সরকারের স্বৈরাচারি শাসনের অবসান ঘটাতে লড়াকু সৈনিকের ভূমিকায় অবর্তীণ অবস্থা নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখছে।
নিজের জীবন দিতে এতটুকু কারপূর্ণ করেনি আবু সাঈদের মত বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সত্যিকারের দেশ প্রেমিক। সারাদেশ জুড়ে চলতে থাকে অমানবিক হৃদয় বিদারক ঘটনা গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করেই শুধু শান্ত থাকেনি আহতদের চিকিৎসা দিতেও দেওয়া হয় বাধা গুলি বিদ্ধ আহতদের হাসপাতালে নেওয়া হলে ডাক্তার চিকিৎসাসেবা দিতে আপত্তি করেন। এসময় ঢাকার সাভারে ইয়ামিন কে গুলি করে মেরে তার লাশ পুলিশের সাঁজোয়া যানে করে নিয়ে মাঠে টহল দেয় পুলিশ ।
আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম সারির সমন্বয়কদের তুলে নিয়ে বিভিন্ন ভাবে সমঝোতা করার চেষ্টা করতে থাকে ভাতের হোটেল নামে ডিবি কার্যালয়ে থাকা হারুন অরফে ( হাউন ) । কোনো অবস্থাতেই যখন ডিবি প্রধান হারুন সমন্বয়কদের নিজের বসে আনতে সক্ষম হচ্ছিলেন না ঠিক তখন-ই খাবার টেবিল সাজিয়ে সেলফি সেলফি খেলা খেলতে শুরু করে হারুন। ছবি তুলে সেগুলো পোস্ট করে আন্দোলনে থাকা লাখ লাখ উৎসুক জনতাকে বুঝানোর চেষ্টা করে যে সমন্বয়কদের সাথে সরকারের সমঝোতা হয়েছে।
তবে এটি যে একটি সাজানো নাটক তা আর জানার বাকি রইল না । রাস্তায় আন্দোলনে থাকা উৎসুক জনতার আন্দোলন আরও প্রখর আকার ধারণ করল। অবশেষে হাসিনা সরকার বঙ্গভবন থেকে পালিয়ে ভারতে যান।
এই পুরো অসম্ভব ঘটনাটি কেবল আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়কদের কারণে সম্ভব হয়েছে ।
সমন্বয়কদের সাথে রাজনৈকিত দলের সম্পর্কে টানাপোড়েন
আজ রাজনৈতিক দলগুলো কেবল নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত কথায় কথায় বলেন নির্বাচন চাই। গণ অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া সমন্বয়কসহ দেশের সকল জনগণ চায় রাষ্ট্র সংস্কার অথচ কেবল রাজনৈতিক দলগুলো চায় নির্বাচন এখানেই সমন্বয়ক ও রাজনৈকিত দলগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরীর একটি কারণ লক্ষ্য করা যাচ্চে।
৭২-এর সংবিধান বাতিলে দেশের জনগণ একমত হলেও রাজনৈতিক দলগুলো তার বিপক্ষে । তাহলে কি আগামী দিনে নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসা দল ভবিষ্যৎতে স্বৈরাচার হওযার কোনো আশা আকাঙ্খায় রয়েছে?
দেশে গুম খুন হত্যা সম্প্রতি আয়না ঘর নামক ভয়ংকর এক টর্চার সেলের আলোচনা সবার মুখে মুখে এই সব কিছুই কেবল হয়েছে ৭২ এর সংবিধান ঘিরে । ৭২ এর সংবিধান আছে বলেই নির্বাচনে জয়ী হওয়া দল স্বৈরাচার রূপ ধারণ করতে পারে।
দীর্ঘ লড়াইয়ের পর রক্তে রচিত নতুন স্বাধীনতা কেবল নির্বাচনের জন্য নয়। সবার আগে প্রয়োজন রাষ্ট্রসংস্কার। রাষ্ট্রসংস্কারের মাধ্যমে কেবল স্বৈরাচার হওয়ার পথ বন্ধ করা সম্ভব অন্যথায় নির্বাচনে আসা দল পরবর্তীতে পুরোনো নীতি অনুসরণ করে সেই ভয়াল রূপ দেখাতে পারে বলে অনেকে মনে করেন।
এখান থেকেই সমন্বয়ক এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে কন্দোল শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
দেশে অরাজকতা তৈরীর চেষ্টা
ভারতীয় নৌবাহিনী বাংলাদেশী জাহাজ ধরে নিয়ে যাওয়া এটার পিছনেও থাকতে পারে কোনো রহস্য । ভারতে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী নেতারা সেখানে বসে দেশকে অস্থিতিশীল করতে নানা রকমের ফাঁদ তৈরীতে ভূমিকা রাখতে পারে। ১৫ বছরে ধরে ক্ষমতায় থেকে মফস্বল শহরের একজন পাতি নেতাও নিজেকে সিটি টেরর নেতা হিসেবে উপস্থাপন করত। হঠাৎ করেই যদি সে ক্ষমতা হারিয়ে যায় সেটা কি আর সহ্য করার মত । কথায় আছে (সোনার ডিম পাড়া হাঁস) আওয়ামী লীগ করে একজন রিকশাচালকও কামিয়েছে লাখ লাখ টাকা যা তিনি আওয়ামী লীগ করার আগে কখনো স্বপ্নেও ভাবতে পারত না।
মিডিয়ার আদৌলে ইতি মধ্যে তা সবাই দেখেছে। কারও কাছে কোনো জবাব দিহিতা ছিল না যার যেভাবে মন চেয়েছে সে সেভাবেই কামিয়েছে অর্থ। ইউপি চেয়্যারম্যানের বাসায় বস্তা ভর্তি টাকা ও ডলার আর প্রশাসনে থাকা প্রধান কর্তা বাবুর কথাই বা আর কি বলব ।